বাজেট ট্যুর হিসাবে নেপালই হোক আপনার প্রথম গন্তব্যস্থল
শিরোনামটা কি দিব দিব করে এটা ভাবতেই ১৩ দিন লাগায়ে ফেললাম। তাই আজ লিখতেই বসলাম।
নেপাল যে এবছরেই ভ্রমণ করব তার কোন পরিকল্পনাই ছিল না। সিঙ্গাপুরে একটা Compition এ যাওয়ার জন্য ভিসা করতে দিছিলাম। কপাল গুণে rejection ও খেলাম ব্যাস ওই দিন পার্সপোর্ট বাসায় নিয়ে এসেই নেপালের টিকিট কেটে ফেললাম। ticketshala.com, gozayaan.com, flightexpert.com, sharetrip.net এসব ঘেটে বের করলাম gozayaan.com এ সবচেয়ে কম দাম। আমি Himalaya Airlines এর টিকিট কেটে ফেললাম ১৪,৩৬৯ টাকায়। যদিও পরের বার মাগনা দিলেও আর নিব না। কারণ ফ্লাইট টা সন্ধ্যার সময়। হিমালয়ের কচুও দেখা যাবে না সন্ধ্যার সময়। তাই একটু বেশি দাম দিয়ে Biman Bangladesh Airlines এর সকালের ফ্লাইট নেওয়াই উত্তম। যদি অনেক সময় Biman Bangladesh Airlines এর ছাড় থাকে টিকিট টা ওই সময়ই করে রাখলে ১৫,০০০ টাকার আশে পাশেই পাওয়া যাবে। আমি টিকিট কেটেছিলাম Sep 21 — Sep 28। যদিও পরে জানছি এটা বৃষ্টির সময় বোকারাই এসময় নেপাল যায়। আমি সেই বোকাদের মধ্যে অন্যতম।
যাওয়ার আগে কই থাকব কি করব এসব মাথায় চিন্তা ছিল। তবে আমার Payoneer এর মাস্টারকার্ড আমার অনেক সময় বাঁচিয়েছে। Hostel জিনিসটার সাথে দেশে এক ভাবে পরিচিত হলেও পৃথিবীতে ট্রাভেলারের জন্য Hostel জিনিস টা কেমন হয় তা নেপাল ট্যুর করতে যেয়েই বুঝেছি প্রথম। আমি যাওয়ার আগে hostelworld.com সব কিছু বুক করে যাই। কাঠমুন্ডুতে থাকার জন্য বুক করেছিলাম Thamel Hostel। এটার খরচ পড়েছিল US$3.00 পার রাত। ব্রেকফাস্ট সহ ছিল। আমি Standard 4 Bed Mixed Dorm এর রুম নিয়েছিলাম। আর Mixed Dorm এ ছেলে মেয়ে একসাথেই থাকে। আমি নিতান্তই মজা করতে নিয়েছিলাম। যেয়ে যদিও এক কাপল কেও পাইছি রুমে =D পোখরার জন্য নিয়েছিলাম Forest Lake Backpackers Hostel, Pokhara এটায় খরচ পড়েছিলা US$4.84 পার রাত। তবে এটা ব্রেকফাস্ট ছাড়া ছিল। নাগরকোটের জন্য নিয়েছিলাম Hotel Mount Paradise, Nagarkot এটায় খরচ পড়েছিলা US$6.75 পার রাত। তবে এটাও ব্রেকফাস্ট ছাড়া ছিল।
যাওয়ার আগে নেপালের ভিসা নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে পেলাম online এ বসেই ফরম পূরণ করলে ওখানে যেয়ে লাইনে দাঁড়ায় থাকা লাগে না। online.nepalimmigration.gov.np/tourist-visa এখানে ফরম পূরণ করলে আর এয়ার পোর্ট এ নেমে লাইনে দাঁড়ায় থাকার ভেজাল নাই আর। এখানে ছবি 1.5"x1.5" সাইজের ছবি দিলে ফরমে সুন্দর করে ছবি আসে। Address in Nepal এ আমি Word No 29 দিয়েছিলাম কারণ Thamel 29 নং ওয়ার্ড এটা নেট সার্চ করে বের করেছিলাম। আর TIA হল Tribhuvan International Airport। এটা পূরণ করে প্রিন্ট করে নিয়ে গেলেই কাজ খতম। তবে না বললেই নয় ফাহাদ ভাই আমাকে এই তথ্যটা দিয়েছিল যাওয়ার আগে।
তারপর অপেক্ষার পর এলো সেই কাঙ্কিত ২১ তারিখ। বিমানের টিকিট, হোটেল বুকিং এর কপি, ভিসা আবেদন ফরম, কয়েক কপি পার্সপোর্ট সাইজের ছবি নিয়ে চললাম নেপালের উদ্দেশ্যে। বাড়ি থেকে বের হবার সময় ঝুম বৃষ্টির কবলে পড়লাম। একটা উবার ডেকে চললাম। এয়ারপোর্ট এ যেয়ে বোর্ডিং পাস নিয়ে ইমিগ্রশনের দিকে চললাম। পুলিশ অফিসার জিঙ্গাসা করল কি করি? বললাম শিক্ষার্থী। জাহাঙ্গীরনগরে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করি। ভর্তি পরীক্ষার ছুটির মধ্যে নেপাল যাই বেড়াতে। ওনি শুনে উল্টা প্রশ্ন করে বসলেন কত দিয়ে টিকিট কিনছি =D বললাম ১৪,৩৬৯ টাকা দিয়ে। ব্যাস ইমিগ্রশন শেষ গল্পের মাঝেই।
ইমিগ্রশন শেষ করে চিল মুডে কিছুক্ষণ বসে থাকলাম। এরপর বোডিং গেট ঘোষণা করা হল। লাইনে যেয়ে দাঁড়ালাম। গিয়ে দেখি বিশাল লাইন। কারণ Himalaya Airlines কম ভাড়ায় সৌদি আরবের যাত্রী নেপালে ট্রানজিট দিয়ে নেয়। এজন্যই পুরা বিমান হাউজ ফুল প্রায়। বিমানে ভাগ্যক্রমে Window সিটই পেয়েছিলাম যদিও বলি নাই। ফ্লাইটে নাস্তা হিসাবে দিল বাদাম আর ড্রিকংস।
Tribhuvan International Airport পৃথিবীর এয়ারপোর্টগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর এয়ারপোর্ট। তাই অনেক Excited ছিলাম ল্যান্ডিং এর সময়। ভালোমত ল্যান্ডিং করে বাস দিয়ে নেওয়া হল Arrival gate এ। বলা ভাল এই এয়ারপোর্টে কোন বোডিং ব্রিজ নেই। তাই সব সময় বাস দিয়েই যাত্রী নেয় ফ্লাইটে। নামার পরই ওয়েলকাম লেখা পেলাম।
ব্যাস নেপালে এসে গেছি! তবে ভিতরে ঢুকেই ইমিগ্রেশনের আগে দেখলাম বিশাল লাইন। Kiosk এ সবাই ফরম পূরণ করছে। এ লাইন এড়ানোর জন্য আমি আগেই ফরম পূরণ করে রেখেছি।
ব্যাস আরামে ইমিগ্রেশনে গিয়ে দাড়ালাম। কোন সিরিয়ালও নেই। ইমিগ্রেশন অফিসার ফরমের কথা বলতেই ফরম বের করে দিলাম ফাইল থেকে। এক কপি ছবিও দিলাম। ওনি সিল লাগায়ে দিলেন। কোন কিছু জিঙ্গাসা না করেই। এত তাড়াতাড়ি করে ফেললেন আমি বলেই ফেললাম “Have you finished my immigration?” উনি বললেন, “হ্যাঁ। আপনি যেতে পারেন এখন।”
ব্যাস নেপালে ঢুকে পড়লাম তাহলে। ঢুকে লাগেজের জন্য কিছুক্ষণ দাঁড়ায়ে ছিলাম। তারপর লাগেজ নিয়ে বের হয়ে পড়লাম সিম কেনার জন্য। Exit Gate এই পেলাম Ncell এর বুথ। আমাদের দেশের রবিরই জাত ভাই আর কি। সবার Mother Company ই হল Axiata। Ncell নেপালের সবচেয়ে ভালো কোম্পানি। আমি ৪০০ npr দিয়ে ৭ দিনের জন্য ৪ জিবি ইন্টারনেট কিনে নিলাম। এক কপি ছবিও লাগছিল এতে। আমার সব হোস্টেলের wifi ছিল তাই আসার সময় ২ জিবির মত বাকিই ছিল। বাইরে শুধু ম্যাপ দেখতে ব্যবহার করতাম তাই হয়ত এমন বেচে গিয়েছিলো। 4G নেটওয়ার্ক ছিল সব জায়গায় এমনকি নাগরকোটএ ৭০০০ ফুট উচুতেও 4G পেয়েছি। আমি সিম + এয়ার পোর্ট থেকে হোস্টেলে যাইতে Pathao ব্যবহার করতে দেশে থেকেই ১০০০ npr নিয়ে গিয়েছিলাম। যদি দেশে অনেক কম রেট দেয়। আমি এছাড়া ২০০ ডলার নিয়ে গিয়েছিলাম মাত্র। ১৫০ npr দিয়ে এয়ারপোর্ট থেকে Thamel Hostel Ltd এ এসে পড়লাম। লাগেজ হাতে রেখে নিয়ে আসছি। আমার লক্ষ্যই হল বাজেট ট্যুর দেওয়া। তবে Pathao পুরো নেপালে আর ব্যবহার করি নাই কারণ Pathao সঠিক লোকেশন দিতে পারে না কারণ তারা Google ম্যাপ ব্যবহার করে না। আমি সব জায়গায় Tootle ব্যবহার করেছি। এটা লোকাল নেপালি কোম্পানি। ওরা Google ম্যাপ ব্যবহার করে। সিম কেনার পরই Tootle সেট আপ করে নিতে পারেন। খুব সহজ। আর এখানে রিচার্জ বা ক্যাশ দুটো অপশনই আছে। আপনি ক্যাশ সিলেক্ট করে নিতে পারেন।
হোস্টেলে এসে লাগেজ রেখে বের হলাম খাবারের সন্ধানে। হোস্টেলের সামনেই পেলাম মমো। ১৬০ npr। কিনে খেয়ে ফেললাম। তখন ১১ টার মত বাজে। থামেলে একটু ঘোরাঘুরি করলাম আরও কি খাওয়া যায় তা দেখতে। এক জায়গায় পেলাম sandwich তা ২৪০ npr এ নিয়ে খেলাম। যাওয়ার সময় ৩০ npr এ ১ বোতল পানি কিনে নিয়ে হোস্টেলে ফেরত গেলাম। সেদিনের মত আমার যাত্রা শেষ। চিল মুডে ঘুমাতে গেলাম। কাঠমুন্ডুতে যেয়ে সবচেয়ে আশ্চর্য হয়েছি কোথাও সিলিং ফ্যান নেই। খুবই কঠিন পাওয়া। রুমে একটা ফ্যান থাকলেও সেটা টেবিল ফ্যান। ব্যাস ওটা ছেড়েই ঘুমালাম। থামেল একটা ট্যুরিস্ট এলাকা। এখানে সব দোকান পাট বন্ধ থাকলেও সারা রাত বার খোলা থাকে। সারা রাত মদ খেয়ে বিদেশীদের রাস্তায় হট্টোগোল বাধানো এসব লেগেই থাকে। বার গুলোও সেরকম। কম দামী বেশি দামী সব ধরণেরই বার আছে থামেলে। তবে আমি একা ছিলাম। তাই গ্যানজাম এড়াতে বারে যাই নাই। কারণ প্রথম সলো ট্যুর বলে কথা।
দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই সকালে উঠে ম্যাপ দেখে একটা রাফ আইডিয়া বানালাম। কোথায় কোথায় ঘোরা যায়। থামেল যেহেতু শহরের মাঝে তাই সব জয়গায় এখান থেকে বেশি দূরে না। তাই সকালে উঠেই Durbur Marg এ গেলাম। যদিও গিয়ে লেখা দেখলাম ১১ টার আগে খুলবে না। তখন মাত্র ১০ টা বাজে। গেটের নিরাপত্তা প্রহরী রে বললাম “Have any tourist sport near this area?” তারা শুনেই বলল, “হ্যাঁ Garden of Dreams আছে। রাস্তার ওপারেই”। ব্যাস গুগলে ম্যাপ দেখে চলে গেলাম। এটাকে Garden of Six Seasons ও বলা হয়। ঢুকতে লাগবে 400 npr। দিলাম কি আর করার ঘুরতে আসছি! ঢুকে দেখি ছোট্ট একটা পার্ক। সেটায় ঢুকতে 400 npr! এখানে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করলাম। ঘুরতেই এক কানাডিয়ান পর্যটক Cindy এর সাথে পরিচয় হল। ছবি তুলতে যেয়ে। ও একা এসেছে। ব্যাস আমার খুশি দেখে কে! শুনলাম ও আজ সারা দিনই কাঠমুন্ড ঘুরবে বেলা ৬ টা পর্যন্ত। আর কি লাগে। ওরেই আমার পার্সোনাল ফটোগ্রাফার বানিয়ে ফেললাম। বেচারারেও অনেক ছবি তুলে দিয়েছি।
Garden of Dreams থেকে বের হয়ে Durbar Marg এ গেলাম। Durbar Marg আসলে নেপালের সাবেক রাজার বাড়ি। যেয়ে 250 npr দিয়ে টিকিট কিনে নিলাম। সার্ক ভুক্ত দেশ এ জন্য কম। অন্যদের জন্য আরও বেশি। এখানে ছবি তোলা নিষিদ্ধ। এমনকি কোন মেটাল ডিভাইসও নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে দেয় না। ব্যাস ব্যাগ মোবাইল সব রেখে টিকিট নিয়েই ঢুকে পড়লাম আমি আর Cindy। ভিতরে যেয়ে আমার দেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রীদেরও কিছু ছবি পেলাম যা টাঙানো আছে। বেশ বড় এরিয়া। ২৫০ রুপি বৃথা যায় নাই। দেখে বাইরে এসে কিছু ছবিও তুললাম তাও মেইন ফটকেরও বাইরে।
Durbar Marg থেকে বের হয়ে ম্যাপ ধরে সোজা চলে গেলাম Durbar Square এ। Durbar Square এ না গেলে মনে হয় নেপাল ভ্রমণই অপূর্ণ থাকবে। Durbar Square এ যেয়ে টিকিট কিনলাম ১৫০ npr এ। এখানেও সার্ক ভুক্ত দেশ এ জন্য কম। অন্যদের জন্য আরও বেশি। যেয়ে Cindy আর আমি ইচ্ছা মত ছবি তুলতে ভুল করলাম না।
এসব ঘুরতে ঘুরতে কখন যে বেলা 4 টা বেজে গেছে তাইই জানি না। ঘোরাঘুরি শেষ করে Cindy কে বিদায় দিলাম। জানি না আর কখনও দেখা হবে কিনা। যাওয়ার আগে ওর সাথে কিছু ছবিও তুললাম। এটাই মনে হয় সলো ট্রাভেলাদের নিয়ম। যাওয়ার আগে ওর সাথে ওর ফেসবুকে কানেক্টেড হলাম। তারপর বিদায় বলে দিলাম।
তারপর থামেলে চলে আসলাম। খুব খিদা পেয়েছিল খেতে হবে। এসে Chicken Burger — 250 npr, Chicken Momo — 180 npr, water — 30 npr দিয়ে পেটে পুরলাম। তারপর খাতা কলম নিয়ে দেখালাম আর কোথায় যাওয়া যায় তা নিয়ে। একটা পানিও কিনলাম 30 npr দিয়ে। এবার Swayambhunath এ যাওয়ার জন্য বের হলাম কিন্তু বৃষ্টি পড়ছে। কি আর করার! একটা দোকানে আশ্রয় নিলাম। এরপর ছাতাও কিনলাম 450 npr দিয়ে। সাধারণত ওমন বড় ছাতা দেশে ৫০০ টাকাতেও দিবে কিনা সন্দেহ আছে।
এরপর আমার বৃষ্টি দেখে আমার এক নেপালি বন্ধু Surit কে নক দিলাম। আমার এক কালে Mozilla Foundation এ এক সাথে Localization করতাম। ও আমাকে ৫ টার দিকে যেতে বলল। হোস্টেলে যেয়ে ওর জন্য কিছু গিফট নিলাম। ঢাকা থেকে নিয়ে এসেছি দিতে কিছু Mozilla এর স্টিকার। নিয়ে বের হলাম। কিছু পথ হাটার পর ওর দেওয়া লোকেশনে গেলাম। মাঝে চিনতে অসুবিধা হলেও ভাল গেট আপের লোক দেখে জিঙ্গাসা করে নিছি। ব্যাস কিছুক্ষণ পর পেয়ে গেলাম। ও আমারে পোখরা তে ২ দিন থাকতে নিষেধ করল। ও আমারে নাগরকোট যেতে বলল। আমার পরিকল্পনাও কিছুটা গোছায়ে দিলো। আমাকে এটাও বলল কেন আমি ওকে না বলে এসেছি। এখন ভাল সময় না নেপাল দেখার। ওর সাথে ও দিন রাত ৯ টা পর্যন্ত আড্ডা দিলাম। এরপর ও আমাকে আমার হোস্টেলের কাছাকাছি এলাকায় মটরসাইকেলে নামায় দিয়ে গেলো। আমি হেঁটে হেঁটে চলতে থাকলাম। হোস্টেলে সকাল বেলা বের হওয়ার সময় একটা রেস্টুরেন্ট এর দেখা পয়েছিলাম। আমার হোস্টেলের পাশেই একবারে নাম Dal Bhat Nepali Kitchen — Thamel। এখানে সেই প্যাকেজ। সম্ভবত আমি নেপালি মুরগী নিয়েছিলাম। খাওয়ার পর দেখি ছাড়ও দিছে। ৪২৫ npr বিল আসছে মাত্র! সেই রকম ভর পেট খেয়েছিলাম। খেয়ে হোস্টেলে চলে গেলাম। সেদিনের পর খান্ত দিলাম ট্যুরটা!
তৃতীয় দিনের শুরুতেই Swayambhunath এ যাওয়ার জন্য বের হলাম। যদি হেঁটে যাওয়ার প্লানটা ছিল একটা বোকামির ফসলই। নেপালের ১-২ কিলো দূরের রাস্তাও যেতে খবর হয়ে যাবে কারণ উঁচু নিচু এলাকা। বেশ কষ্ট করে গেলাম। তারপর সে এক বিরাট ব্যাপার। অনেক উঁচুতে উঠতে আমাকে মনে হয় ২-৩ বার রেস্ট নিতে হইছে। ভাগ্য ভালো ছিল ১ বোতল পানি নিয়েছিলাম। অনেক কষ্টে অত উপরে উঠছি। তবে উঠার পর কষ্টটা উশুল হইছে। চূড়া থেকে কাঠমুন্ড শহর দেখা যায়।
তবে এখানে সবচেয়ে মজা ব্যাপার ছিল Entry fee ছিল 50 npr। আমার চেহারা দেখে আর চায় নাই ;P আসলে নামার সময় দেখছি যে বিদেশীদের জন্য এন্ট্রি ফি ছিল।
এরপর National Museum এ গিয়েছিলাম। এখানে Entry fee ছিল 250 npr সব কিছুই সার্কভুক্ত দেখে একটু ছাড়। বেশ ভাল ছিল। নেপালের সব ইতিহাসই আছে এখানকার ৩ টা বিল্ডিং এ। এরপর সেখান থেকে বের হতেই দেখি Military Museum। একেবারেই বিপরীতে। সেখানে যেয়ে বললাম বিদেশীরা ঢুকতে পারবে কিনা। বলল পারবে। টিকিটের দাম ছিল 40 npr। কিনে ঢুকে দেখলাম। অনেক কম সময় ছিল। ৩ টায় বন্ধ হচ্ছিল সেদিন। আমি ১৫ মিনিটেই ঘুরে আসি। ছোট জায়গা। কিন্তু অনেক কিছু ছিল দেখার মত। সেখান থেকে Patan Durbar Square এ Tootle নিয়ে গেলাম। ভাড়া ছিল 130 npr। এখানে এন্ট্রি ফি ছিল 250 npr। এরপর ভিতরের জাদুঘরও দেখলাম। কিছু ছবিও তুললাম। এখান থেকে আমার ব্যক্তিগত কাজে ICIMOD (International Centre for Integrated Mountain Development) এ গিয়েছিলাম। বাংলাদেশও এটার একটি সহযোগী দেশ।
ICIMOD থেকে Pashupatinath Temple এ গিয়েছিলাম। তবে এখানে জুতা খুলে ঢুকতে হয়। আর ঢোকার সময় একটা মিথ্য বলতে হব আপনি হিন্দু। না হলে ঢুকতে দিবে না। আমি সত্য বলায় ঢুকতে পারি নাই ভিতরে। যাওয়ার পথে Aviation Museum এর চেহারাটাও দেখে দিয়েছিলাম। সন্ধ্যা নেমে গিয়েছিল তাই হোস্টেলে ব্যাক করতে হল। Pashupatinath Temple থেকে 90 npr আসছিল Tootle এ ভাড়া। এরপর সেই Dal Bhat Nepali Kitchen — Thamel খেলাম ৩৮০ রুপি পড়েছিল। এরপর দিলাম এক ঘুম সকাল পোখরা যেতে হবে।
সকাল ৬ টায় উঠে হোস্টেলের ভাড়া পরিশোধ করে ওনার থেকে Kathmandu to Pokhara টিকিট নিলাম ৮০০ npr এ। টুরিস্ট বাস।একটা তথ্য দিয়ে রাখি Thamel Hostel, Kathmandu এর ম্যানেজারের নম্বর +977–9851053265 ওনার Whatsapp ও আছে। Whatsapp এ নক করেও বুক করতে পারেন। এক্ষেত্রে ৩০০ npr করে নিবে ব্রেকফাস্ট সহ। আর hostelworld থেকে নিলে ৩৫০ এর মত পড়ে। আপনার ইচ্ছা হলে দেখতে পারেন।
আমি লাগজ টেনে নিয়ে বাস স্ট্যান্ডে গেলাম। কাছেই প্রায় ৫ মিনিট হাঁটার পথ। বাসে উঠে রওনা হলাম। বাসে প্রায় সবাই বিদেশী। ২-১ জন নেপালি ছাড়া। ত্রিশুলী নদীর পাশে দিয়ে আঁকাবাক পথ ধরে আমাদের বাস ছুঁটে চলল। তবে Trishuli River Rafting এর জন্য বেশ বিখ্যাত।পুরো রাস্তা তো আর রাস্তা নয় এ যেন সার্পিল পথ। কোন সোজা রাস্তাই নাই। পাহাড়ের কোল ঘেঁষে রাস্তা। যাত্রা পথে কয়েক জায়গায় বিরতি নিল। তবে আমি পাঠকদের বলল আগেই থামেলের কোন সুপার সপ থেকে কিছু বিস্কিট চিপস কিনে নিতে কারণ রাস্তায় প্রায় গলা কাটা দাম রাখে। যেটার দাম ৩০ রুপি সেটা রাখে ৭৫ রুপি। এখন ভাবেন অবস্থা! বিকাল ৩ টার দিকে বাস পৌঁছালো। সকাল ৭ টার দিকেই ছেড়েছিল বাস। বাস স্টপ থেকে অনেকটা গোরামি করেই হোস্টেল পর্যন্ত হেঁটে গিয়েছিলাম। কারণ Tootle এ দেখাচ্ছিল ৭৫ রুপি কিন্তু কেউ ২০০ এর নিচে যেতেই চাচ্ছিল না। পরে ভাবলাম না খারাপ চায় নাই। ভাল দামই চেয়েছিল।
হোস্টেলে এসেই ২ দিনের বিল দিয়ে দিলাম। এরপর লাগেজ রেখেই হাটতে বের হলাম আর বাসের টিকিটের খোঁজ করতে বের হলাম। এক এজেন্সিতে গেলাম। ওনার নাম Santosh Bhatta (facebook.com/santosh.bhatta.9469) ওনি আমাকে ৩৮০০ রুপিতে (বাস টিকিট পোখরা টু কাঠমুন্ডু সাথে বাস স্ট্যান্ডে যাওয়া, সারাংকোটে সূর্যদোয় দেখা, সকালের নাস্তা, সিটি ট্যুর) আমি রাজি হয়ে গেলাম কারণ পোখরা টু কাঠমুন্ডু সাথে বাস স্ট্যান্ডে যাওয়া — ১০০০ রুপি, সারাংকোটে সূর্যদোয় দেখা — ১৫০০ রুপি, সিটি ট্যুর — ১০০০ রুপি, সকালের নাস্তা — ২০০। তাই ৩৮০০ রুপি খারাপ না। ডিল সেড়ে আমি রাতের ডিনার করে নিলাম। Buff momo খেলাম। কত দিয়ে খেয়েছিলাম মনে নাই। ওই ১৫০-২০০ ই হবে হয়ত। সে দিন হোস্টেলে ফিরে ঘুমাতে চলে গেলাম। রাতে ৪ টার দিকে উঠে দেখি ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। হোস্টেলের ৪ তলায় যেয়ে বাকি সময় কাটিয়ে দিলাম।
পঞ্চম দিনের শুরুতে ৫ টার সময় ড্রাইভার আমাকে ফোন দিল হোস্টেলের সামনে এসে সারাংকোটে সূর্যদোয় দেখতে যাব। বের হয়ে পড়লাম ছাতা হাতে নিয়েই। সে অনেক উঁচু পথ। প্রায় ৫ টা ৩০ এর দিকে যেয়ে পৌঁছালাম। যেয়ে দেখি আমি এক মাত্র বান্দা আসছি। পরে আরও কিছু লোকজন আসল। সেখান থেকে কাঞ্চণজংঘাও দেখা যায় আকাশ পরিস্কার থাকলে। কিন্তু কপাল খারাপ। আমার জার্মান বন্ধুটির মতে Fucking Cloud stays in everywhere। তাও ভালই উপভোগ করলাম। ওখান এক আমেরিকানের সাথে পরিচয় হল সে Alaska তে থাকে। ওর দেখা প্রথম বাংলাদেশি হল আমি!
সারাংকোট থেকে নেমে সকালে ব্রেকফাস্ট করলাম। বেশ মজাদার ছিল। এরপর একটু ঘুরে বেড়িয়ে ৯ টার দিকে টুরিস্ট বাস এসে তুলে নিয়ে গেল সারা শহর ঘুরাতে। প্রথমেই গেল Bindhyabasini temple এ, এরপর Mahendra Cave এ এন্ট্রি ফি ৮০ রুপি, Mahendra Cave এর পাশেই Bat cave — ৮০ রুপি এন্ট্রি ফি। বেশ দেখার মত গুহা ছিল। এরপর নিয়ে গেল দুপুরের খারাব খেতে এবং Seti River এর সাদা পানি দেখতে। Seti River এর এন্ট্রি ফি ৫০ রুপি। সেখান দুপুরের খারাব হিসাবে Chicken Fried rice — 175 npr and Mountain Dew — 50 npr নিলাম। সেখান থেকে অনেকটা দূরে Begnas Lake নিয়ে গেল। অনেক সুন্দর লেক। এখানে অনেকে বোটিং করে। সময় থাকল আর আকাশ ভালো থাকলে আমিও মিস করতাম না। এখান থেকে Mahendra Cave নিয়ে গেল। এখানকার এন্ট্রি ফি ৫০ রুপি। এর পাশেই Davi’s Falls। এখানকার এন্ট্রি ফি ৩০ রুপি। তবে Mahendra Cave এ ঢুকতেই একটা মার্কেট আছে এখান থেকে আমি প্রিয়জনদের জন্য কিছু গহনা কিনলাম। বেশ ভালো সস্তা দামাদামি করে কিনতে হয়। যেমন একটা বালার দাম চেয়েছে ২০০ রুপি আমি ১৫০ রুপিতে নিছি। বেশ ভাল দাম বলতে গেলে। একটা টি-শার্ট নিয়েছি ৩০০ রুপিতে বেশ ভালো মানের। ৪০০ চায় যদিও। তাই পোখরাতে কিছু কেনার থাকলে Mahendra Cave এর এখান থেকেই কিনতে পারেন। ভালো দামে পাবেন।
এরপর আমাদের শেষ স্পট হিসাবে Phewa Lake এ নিয়ে গেল। এটা আমার হোস্টেল এলাকায় তাই নতুন না। এখানে কায়াকিং, বোটে চড়া অনেক কিছু করতে পারেন। তবে Pokhara তে recretion টাইপের কিছু করতে চাইলে ২-৩ দিন থাকতে হবে। একদিন কায়াকিং, বোটে চড়া আর একদিন Bungee jumping/Paragliding আর একদিন সিটি ট্যুর।
সব কিছু শেষ করে হোস্টেলে ফিরে গেলাম ওদিনের মত। এরপর রেস্ট নিয়ে রাতের খারাব খুঁজতে বের হলাম। আমি পরিকল্পনা ছিল মহিষের কিছু একটা খাওয়া। তাই সুকুটি খেলাম। এটা মহিষের মাংস শুটকি করে রান্না করা। চাঁবাতে আমার খবর হয়ে গেছে। এখানেও আনলিমিটে ভাত ছিল। সুকুটি নেপালের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার।
খাওয়ার পর একটু হাঁটাহাঁটি করে হোস্টেলে ঘুমাতে চলে গেলাম কারণ ৭ টায় বাস।
ষষ্ঠ দিনের শুরুতেই ৬ টা তেই রেডি হয়ে আছি ড্রাইভার আসবে আসবে আমাকে নিতে। ৬:৩০ এ সে আসল। এরপর আমাকে বাস স্ট্যান্ডে নামায় দিয়ে গেল। বাস উঠলাম। বাস আবারও আকা বাঁকা পথ ধরে চলতে থাকল। এবার কপালটা আমার মন্দ বাস কাঠমুন্ড পৌঁছাতে রাত ১২ টা বেজে গেল প্রায় ১৭ ঘন্টা লগল পৌঁছাতে! ভাবা যায়! আমার জীবনের অন্যতম দীর্ঘতম বাস যাত্রা! কারণ রোডে নাকি একটা দূর্ঘটনা ঘটেছিল। আর আসার সময় লক্ষ্য করলাম ভালই দূর্ঘটনা ঘটে কাঠমুন্ডু টু পোখরা রুটে। এসে খিদার চোটে ৭৫ রুপি দিয়ে এক চিপস খেয়ে শুয়ে পড়লাম।
সপ্তম দিনে পালা এবার! উঠে গোসল করে নিয়ে বের হলাম। সেই রেস্টুরেন্টে গিয়ে আবারও ৩০০ রুপিতে পেট ভরালাম। এবার হেঁটে গেলাম Miniso তে উদ্দেশ্য এক বন্ধবীর ব্যাগ কিনতে হবে। আমিও কিছু জিনিস কিনলাম। কিনে হোস্টেলে এসে সব রেখে নাগরকোটের উদ্দেশ্য যাত্রা শুরু করলাম। Tootle থেকে ৪০০ রুপি তে Bhaktapur এ Nagarkot bus stoppage এ গেলাম ওখান থেকে Nagarkot এর উদ্দেশ্যে সরাসরি বাস আছে। বেশ উঠে পড়লাম। ওরা ডাকেই Nagarkot করে। ৫৫ রুপি ভাড়া। বিকাল ৫ টায় এসে পৌঁছালাম বাস ছাড়ছিল মনে হয় ৪ টার দিকে। বেশি দূরে নয় কিন্তু অনেক উঁচু জায়গা প্রায় ৬ হাজার ৫০০ ফিট।
এসে হোস্টেলে উঠলাম। অসম্ভব সুন্দর লোকেশনে হোস্টেল। দূর থেকে দেখেই চিনতে পারলাম। মালিক নিজেই ম্যানেজার। অনেক ভাল মানুষ। আমি ১ দিন পরে গেছিলাম তাও সে গ্রহণ করছে কোন রকম অতিরিক্ত অর্থ ছাড়াই। হোস্টেলে উঠে ব্যাগ রেখে বের হলাম খাবারের জন্য। ২০০ রুপিতে Chicken fried rice খেলাম। খেয়ে ঘুম দিলাম। কারণ ভোরে উঠতে হবে ভিউ পয়েন্টে যেতে হবে।
অষ্টম দিনের যাত্রা শুরু করলাম ভোরে। এক কালে মা র সাথে স্কুলে যেতাম বলে সাথের বন্ধুরা নানা ধরণের টিটকারি করত। আর আজ!! বের হয়েছি ভোর 4:30 am এ। লক্ষ্য Nagorkot View Point। এটা মনে হয় আসলে প্রেম। চারপাশে মেঘে ঢাকা জানি হিমালয়ের টিকিও দেখতে পাব না। তো কি আর করার। হাঁটা ধরলাম ম্যাপ দেখে দেখে। প্রতি 150–200 ফিট পর পর ই যেয়ে বসতে হচ্ছিল। কারণ জীবনে কোনদিন টানা 2–3 km হাঁটার অভ্যাস নাই আর এটা তো হিমালয় এলাকা। ঘুট ঘুটে অন্ধকার মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে হাঁটছি। সামান্য অন্য মনস্ক হয়ে নিচে পড়ে গেলে নিশ্চিত মৃত্যু। লাশ হয়ে ও দেশে ফেরা হবে না। 1 মিটার জায়গাই আলো তে ঠিক ঠাক দেখা যাচ্ছে না। আবার পাশে লেখা Reserved Forest! ভাবলাম এবার বুঝি ইয়াতি খাবে =D তাও সব কল্পনা ফেলে দিয়ে হেঁটে চললাম। অবশেষে View Point এ যেয়ে দেখলাম আমি একমাত্র বান্দা যে এই মেঘ দেখেও আসছি =D এবার 2 তলার মত উঁচু টাওয়ার এ উঠতে হবে খাড়া সিঁড়ি বেয়ে। কিছু না ভেবে সাবধানে উঠে পড়লাম। তবে কিছুক্ষণ পর 2 জন নেপালি আসল। তাদের থেকে ছবি তুলে নিতে অপেক্ষা করলাম না। যতই হোক প্রায় 2000 m উঁচু জায়গা বলে কথা।
যদিও এখান থেকে Mount Everest সহ প্রায় সব পর্বতই দেখা যায়। কিন্তু আমার কপালে কিছুই জুটল নাহ।
ভিউ পয়েন্ট থেকে নামতেই ৮ টা বেজে গেল। তাড়াতাড়ি করে ব্যাগ নিয়ে চেক আউট করলাম। কারণ বিকাল ৪ টায় ফ্লাইট। যেয়ে বাস ধরলাম Bhaktapur আসার জন্য। ১০ টা নাগাদ এসে পৌঁছালাম। বাসে এক নেপালি আর্মি কর্মকর্তার সাথে পরিচয় হল ওর নাম Suja। ও গল্পক্রমে বলল থামেলের কাছাকাছি জায়গায় যাবে। আমি ওর সাথে গেলাম। আমার আর Bhaktapur Durbar Square দেখা হল না। যদিও সব Durbar Square ই একই মত। সময়ও বেশি নেই। ওর সাথে একটু এগিয়েই Samakhushi লাইনের একটা বাসে উঠলাম। আপনি কোন দোকান দারকে ভাঙা ইংরেজিতে বললেও দেখায় দিবে কোথায় বাস স্টপেজটা।ওর সাথেই Samakhushi তে এসে নামলাম। বাস ভাড়া ছিল ২৫ রুপি। ওখান থেকে থামেল আসলাম এক বাসে ভাড়া ১৫ রুপি। এভাবেই ৯৫ রুপিতে Nagarkot থেকে Thamel এ আসলাম! চিন্তা করুন পাবলিক পরিবহণ ব্যবহারের সুবিধা।
এরপর খেয়ে নিলাম সেই ভাল লাগার রেস্টুরেন্টেই ৩০০ রুপিতে চিকেন এর সেট। এরপর আবার হোস্টেলে যেয়ে ব্যাগ নিয়ে গেলাম Miniso তে। আবার বান্ধবীর ব্যাগ নিতে হবে আরেকটা। সে বাদ ফেলছে। যেতে একটা ক্ষতি করে বসলাম নিজের। Motorbike এর silencer pipe এর লেগে আমার নতুন কেনা Neck Pillow টা একটু পুড়ে যায়। যদিও পরে দেখছিলাম। ব্যাগে রাখছিলাম তাও। এরপর এয়ারপোর্ট চলে গেলাম ওই ভরা ১৫ কেজি ওজেনের লাগেজ হাতে নিয়েই তাও Motorbike এ করে! ২০৫ রুপি ভাড়া ছিল Tootle এ। এরপর এয়ারপোর্ট ইমিগ্রেশন শেষ করে শেষ সিকিউরিটি চেক ইনে বেশ মজার কান্ড করেছি। থাক তা ব্লগে না লিখি। সেটা নিজের সাথেই মজা ছিল একটা। কোন মতে ফ্লাইটে উঠে বসলাম! উঠে মনে মনে ভাবলাম যাক বেঁচে গেছি ;P এরকম কাজ আর করব না কখনও। সেটাও ছিল এক বন্ধুর জন্যই। আমি মজার শিকার হলাম টাকা বাঁচাতে :P যাক ফ্লাইটে মাত্র ৩৫-৪০ জন লোক সবাই ট্যুরিস্ট অন্য কেউ নেই। পুরা ফ্লাইটই ফাঁকা।
ব্যাস আমার নেপাল ভ্রমণের ইতি ঘটলো!
এবার প্যাকেজ করে দিই সবার।
৩ দিনের হলে
Day 1: Land in Kathmandu
Day 2: City Tour
Day 3: Back to Dhaka
৮ দিনের হলে
Day 1: Land in Kathmandu
Day 2: City Tour of Kathmandu
Day 3: Bhaktapur + Nagarkot
Day 4: Back to Kathmandu + Marketing
Day 5: Kathmandu to Pokhara
Day 6: City tour of Pokhara
Day 7: Pokhara to Kathmandu
Day 8: Back to Dhaka
এখানে নিজের মত Customize করতে পারেন। City tour of Pokhara না করে Bungee jumping/Paragliding করতে পারেন। এভাবে নিজের মত করে Customize করে নিতে পারেন। আর সিটি ট্যুরের জন্য হোস্টেল বা হোটেলের আশেপাশে কোন এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করবেন। ওরা অনেক দাম চাবে আপনি ১০০০-১২০০ নেপালি রুপির ভিতরই নেওয়ার চেস্টা করবেন। Pokhara সিটি ট্যুরের জন্য +977 982 5113190 (কল্পনা থাপা) — whatsapp এই মহিলার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। ওনারা ১০০০ রুপিতে Pokhara সিটি ট্যুর দেওয়ায়।
আর নেপাল ভ্রমণের সবচেয়ে উপযুক্ত সময় October — November। October এর প্রথম ৭ দিন পর থেকে তাও। আকাশ পরিস্কার থাকে এসময়। হিমালয় দেখা যায় এসময়।
আমার সব মার্কেটিং করেও ২২৫ ডলারের মত লাগছে। যদিও ২৫ ডলার অন্যের জিনিস ছিল। আমার ২৩০০০ হাজার নেপালি রুপির (২০০ ডলার) মত লাগছে এর ভিতর নিজের মার্কেটিং ও ছিল।
আর ৩ দিনের ট্যুর হলে যদি হোস্টেলে থাকেন তাহলে ৫০০০ টাকার ভিতরও (ফ্লাইট খরচ বাদে) নেপাল ঘুরা সম্ভব। আসলে পার্সপোর্ট এ খালি সিল লাগানো ইচ্ছা থাকলে ৩ দিনের ট্যুরই দেওয়া উচিত। কারণ Bungee jumping/Paragliding ছাড়া Pokhara যাওয়াটাই বৃথা। এটা আমার মতামত। আর নেপাল হালাল খাবার খুঁজলে অনেক বিপদ। অনেক দাম এবং পাওয়া কষ্টকর।
আর যেখানেই যান পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। আমি টিস্যুটাও ব্যাগে নিতাম ব্যবহারের পর। যদিও নেপাল বাংলাদেশের মতই অপরিচ্ছন্ন দেশ।
লেখক এর পরিচয়:
এস এম সারওয়ার নবীন। আমি বর্তমানে জাবিতে CSE তে undergrad শেষ করে এখন মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। আমাকে ফেসবুকে নক দিতে পারেন জরুরী কোন দরকারে (facebook.com/smsnobin77)।